ইন্ডিসিস ট্রেডিং

আপনি যদি ইন্ডাইসে ট্রেডিং-এ আগ্রহী হয়ে থাকেন, তাহলে ইন্ডাইসে ট্রেডিং-এর ভিত্তি, এটি কিভাবে কাজ করে, এর সাথে সম্পর্কিত ঝুঁকি, এবং ট্রেডিং-এর বিভিন্ন কৌশল সম্পর্কে শেখার মাধ্যমে শুরু করতে পারেন। এরপরে, HFM-এর অধীনে একটি লাইভ কিংবা ডেমো ট্রেডিং অ্যাকাউন্ট খুলুন, আপনার ইন্ডেক্স বেছে নিন এবং আপনার পজিশন ওপেন করুন।

বিভিন্ন ফ্যাক্টর আছে যেগুলো ইন্ডেক্সের অ্যাসেটের মূল্যকে প্রভাবিত করতে পারে এবং ফলস্বরূপ ইন্ডেক্সের মূল্য়কে প্রভাবিত করে। ফ্যাক্টরগুলোর কয়েকটি হচ্ছে:

1. আর্থিক তথ্য এবং নির্দেশক: মূল্যস্ফীতি, GDP-এর বৃদ্ধি, কর্মসংস্থানের পরিমাণ এবং ভোক্তার খরচের মতো আর্থিক নির্দেশক অ্যাসেটের মূল্য এবং ইন্ডেক্সের মূল্যের উপর প্রভাব ফেলতে পারে।
2. কোম্পানির আয়: কোম্পানির আয়ের যে রিপোর্ট থেকে ইন্ডেক্স তৈরি করা হয়, যার কারণে ইন্ডেক্সের মূল্যে অনেক প্রভাব পরতে পারে। ইন্ডেক্সের অধীনে কোম্পানির ইতিবাচক আয়ের রিপোর্টের ফলে বিনিয়োগকারীর বিশ্বাস বেড়ে যেতে পারে এবং ইন্ডেক্সের মূল্য বেড়ে যেতে পারে, অন্যদিকে নেতিবাচক আয়ের রিপোর্টের ফলে ইন্ডেক্সের মূল্য কমতে পারে।
3. সুদের হার: সুদের হারে পরিবর্তন হলে এর ফলে ইন্ডেক্সের মূল্যে প্রভাব পরতে পারে। সুদের হার যদি বেশি হয়ে থাকে তবে ধার করতেও বেশি অর্থের প্রয়োজন পরে, এতে করে প্রাতিষ্ঠানিক আয় কমে যেতে পারে, যার ফলে ইন্ডেক্সের মূল্য কমে যেতে পারে।
4. রাজনৈতিক ঘটনা: নির্বাচন, নীতির পরিবর্তন, এবং জিওপলিটিক্যাল সমস্যার মতো রাজনৈতিক ঘটনার কারণে ইন্ডেক্সের মূল্যে প্রভাব পরতে পারে। এই ঘটনাগুলোর কারণে বিনিয়োগকারীরা অনিশ্চয়তায় ভুগতে পারেন এবং এতে করে মার্কেটে অস্থিরতা দেখা দিতে পারে।
5. বিনিয়োগকারীর মনোভাব: সবশেষে, বিনিয়োগকারীর মনোভাব এবং মার্কেটের সাইকোলজি ইন্ডেক্সের দামের ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলতে পারে। বিনিয়োগকারীর ইতিবাচক মনোভাবের ফলে ক্রয়ের হার বেড়ে যেতে পারে এবং ইন্ডেক্সের মূল্য বেড়ে যেতে পারে, অন্যদিকে নেতিবাচক মনোভাবের ফলে বিক্রয় এবং মূল্য হ্রাস হতে পারে।

বিশ্বে সবথেকে ট্রেডিং করা হয় যেসকল ইন্ডাইসে:

1. S&P 500: S&P 500 হচ্ছে, ইউনাইটেড স্টেটসের 500টি বৃহৎ পাবক্লিক ট্রেডিং কোম্পানির মার্কেট-ক্যাপ অনুযায়ী ইন্ডেক্স। এটাকে সাধারণত U.S ইক্যুইটি মার্কেটের সবথেকে ভালো নির্দেশক হিসেবে গ্রহণ করা হয় এবং বিশ্বে সর্বাধিক পরিমাণে ট্রেডিং করা ইন্ডাইসগুলোর একটি এটি।
2. NASDAQ Composite: NASDAQ Composite হচ্ছে, NASDAQ স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত 3,000-এর ও বেশি কোম্পানির ইন্ডেক্স। এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত আছে বিভিন্ন প্রযুক্তি এবং বিকাশ-কেন্দ্রিক কোম্পানি, আর এটি সেই সকল বিনিয়োগকারীদের কাছে জনপ্রিয় যারা এই সেক্টরগুলো নিয়ে আগ্রহী।
3. Dow Jones Industrial Average: Dow Jones Industrial Average, যা “the Dow” নামে পরিচিত, হচ্ছে 30টি বৃহৎ U.S. কোম্পানির মূল্য-অনুসারে ইন্ডেক্স। এটি বিশ্বের সবথেকে পুরানো এবং সবথেকে পরিচিত স্টক মার্কেট ইন্ডাইসেস গুলোর একটি।
4. FTSE 100: FTSE 100 হচ্ছে, লন্ডন স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত সর্ব বৃহৎ 100টি কোম্পানির মার্কেট-ক্যাপ অনুযায়ী ইন্ডেক্স। এটি মূলত UK ইক্যুইটি মার্কেটের অবস্থার ধারণা পাওয়ার জন্য ব্যবহার করা হয়।
5. Nikkei 225: Nikkei 225 হচ্ছে, টোকিও স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত 225টি ব্লু-চিপ কোম্পানির মূল্য অনুসারে ইন্ডেক্স। এটি মূলত জাপানিজ ইক্যুইটি মার্কেটের অবস্থার ধারণা পাওয়ার জন্য ব্যবহার করা হয়।
6. DAX: DAX হচ্ছে, জার্মানির ফ্যাঙ্কফুর্ট স্টক এক্সচেঞ্জের মধ্যে, মার্কেট-ক্যাপ অনুযায়ী সবথেকে বড় 30টি কোম্পানির ইন্ডেক্স। এটি মূলত জার্মান ইক্যুইটি মার্কেটের অবস্থার ধারণা পাওয়ার জন্য ব্যবহার করা হয়।

বিনিয়োগকারীদের মাঝে এই ইন্ডাইসেস গুলো জনপ্রিয় কারণ এগুলো স্টক মার্কেটের একটি বিস্তৃত প্রতিনিধিত্ব করে এবং এগুলো ব্যবহার করে বিভিন্ন সেক্টর এবং ইন্ডাস্ট্রির কার্যক্ষমতা বুঝা যায়।

দীর্ঘ মেয়াদী ইন্ডেক্স ক্রয়-বিক্রয়ের মানে হচ্ছে এই আশা নিয়ে ইন্ডেক্স ক্রয় করা যে এর মান সময়ের সাথে বেড়ে যাবে। মূলত, একজন বিনিয়োগকারী এই আশা নিয়ে ইন্ডেক্স ক্রয় করেন যে তিনি যেন উচ্চ মূল্যে ভবিষ্যতে তা বিক্রয় করে লাভ করতে পারেন। দীর্ঘ-মেয়াদী ইন্ডেক্স ক্রয়-বিক্রয় হচ্ছে একটি বুলিশ কৌশল কারণ, বিনিয়োগকারী আশা করেন যে মার্কেটে ইন্ডেক্সের দাম বেড়ে যাবে।

অন্যদিকে, একটি ইন্ডেক্স আগে আগে বিক্রি করে দেওয়ার মানে হচ্ছে, এই আশায় ইন্ডেক্সটি বিক্রি করে দেওয়া যে সময়ের সাথে এটির মূল্য কমে যাবে। মূলত, একজন বিনিয়োগকারী ইন্ডেক্স ধার নেন, চলমান মার্কেটের দামে তা বিক্রয় করেন, এবং পুনরায় মার্কেটে যখন ইন্ডেক্সের দাম কমে যায় তখন তা ক্রয় করে যার থেকে ধার নিয়েছেন তাকে ফেরত দেন এবং এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে লাভ করেন। স্বল্প মেয়াদী ইন্ডেক্স ক্রয়-বিক্রয়ের কৌশলটি একটি বিয়ারিশ কৌশল, কারণ বিনিয়োগকারী আশা করছেন যে মার্কেটে ইন্ডেক্সের দাম কমে যাবে।

স্বল্প সময়ে বিক্রি করা দীর্ঘ মেয়াদীর তুলনায় বেশি ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে, কারণ তাত্ত্বিকভাবে, মার্কেটে কোনো বস্তুর মূল্য কত বেশি হতে পারে তার কোনো সীমা নেই, কিন্তু এর মূল্য কত কমতে পারে সেই ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধতা আছে। এর মানে হচ্ছে স্বল্প মেয়াদী বিক্রেতাকে হয়তো, তিনি যে মূল্যে ইন্ডেক্সগুলো বিক্রি করেছেন তার থেকে বেশি মূল্যে সেগুলো আবার ক্রয় করতে হতে পারে, যার ফলে তার ক্ষতি হয়।

বিনিয়োগের লক্ষ্য অর্জন এবং ঝুঁকির প্রতি নিজেদের সম্মুখীন হওয়ার পরিমাণ কমানোর জন্য, বিনিয়োগকারীরা দীর্ঘ এবং স্বল্প মেয়াদী কৌশল অবলম্বন করতে পারবেন। এটা মনে রাখতে হবে যে, ইন্ডাইসেসে ট্রেডিং করা জটিল হতে পারে। তাই এধরণের ট্রেডিং-এ অংশগ্রহণ করার আগে বিনিয়োগকারীদের সাবধানতার সাথে বিনিয়োগের লক্ষ্য, ঝুঁকির মাত্রা, এবং আর্থিক অবস্থার কথা বিবেচনায় নেওয়া উচিত।